মার্চ ২৮, ২০২২
‘নয় মাস সাপ ব্যাঙের সাথে পানিতে থাকতে চায় না সাতক্ষীরার মানুষ’
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা দূরীকরণে করণীয় বিষয়ক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমাবার (২৮) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে ‘আসছে বর্ষা ও জলাবদ্ধতা : নিষ্কাশনের পূর্ব প্রস্তুতি জরুরী’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রবীণ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান।
বক্তারা বলেন, বছরের নয় মাস সাপ ব্যাঙের সাথে পানিতে থাকবো আর তিন মাস ভালো থাকবো এমনভাবে আমাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই যন্ত্রণা থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই। আমরা জলাবদ্ধতামুক্ত জনপদ চাই। নাগরিক সংলাপে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতী ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রায় একই সুরে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের বরাদ্দকৃত টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। খননের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঠিকাদার নিয়োগ নয় বরং নিজেরাই পরোক্ষভাবে ঠিকাদারিত্ব করে পানি সরানোর নামে এসব খননকাজ থেকে লুটে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ সালে বেতনা খননের নামে যে লুটপাট চালানো হয়েছিল ঠিক একই ধারাবাহিকতা এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাতক্ষীরার প্রাণসায়ের খননের নামে বাস্তবতা বর্জিত প্রকল্প দিয়ে টাকা আত্মসাত এবং মরিচ্চাপ খননের নামেও একই কায়দায় সরকারি টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। আর এসব ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমাদের কোন বক্তব্য পানি উন্নয়ন বোর্ড গ্রহণ করছে না। এমনকি এসব কাজের ভেতর ও বাহির সম্পর্কেও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করতে বাহানা করছেন। সংলাপে অংশ নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে ভদ্রলৌকিক সংলাপ করে লাভ হবে না বরং প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্টদের ঘেরাও করে জবাবদিহিতা আদায় করতে হবে। সরকার সাতক্ষীরার দুটি নদী বেতনা ও মরিচ্চাপ এবং সংশ্লিষ্ট ৮২টি খাল খননের মহাপরিকল্পনা নিয়ে ৪৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ এই টাকা জনগণের কল্যানে ব্যবহৃত হতে পারছে না।
তারা আরও বলেন, সরকারের বরাদ্দ দেওয়া টাকা পাউবো কর্মকর্তারা নিজেদের আড়াল করে ঠিকাদারদের নামে কিনে নেয়। সেই কাজে নিয়োগ করা হয় সাব ঠিকাদার। আর সাব ঠিকাদাররা শ্রমিকদের সাথে চুক্তি করে সামান্য কিছু কাজ দেখিয়ে প্রকল্পের ইতি টেনে থাকেন। এভাবেই সরকারি টাকা কর্মকর্তারা পকেটে তুলে নেয়। আর মানুষ বারবারই জলাবদ্ধতায় ডুবতে থাকে। অনতিবিলম্বে প্রাণসায়ের খাল যথানিয়মে খনন করে বেতনার তিন চারটি অকেজো ¯øুইসগেট গুড়িয়ে দিয়ে এবং চিংড়ী চাষের নামে দেওয়া ছোটবড় বাঁধ ভেঙে চুরে ও সাতক্ষীরা পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে সচল করে জনগণকে জলাবদ্ধতামুক্ত করা যাবে বলে নাগরিক কমিটির সদস্যরা জোরালো মন্তব্য করেন। 8,380,728 total views, 473 views today |
|
|
|